গ্রাম বাংলার লোককথা ( দ্বিতীয় পর্ব)
ঢাকা জেলার দূরবর্তী একটি গ্রামের বর্ননা নিয়ে আবার চলে এসেছি আপনাদের মাঝে ।গ্রাম বাংলার লোককথার এটি দ্বিতীয় পর্ব ।আজ আপনাদের সাথে যে গ্রামের গল্প উপস্থাপন করব সে গ্রামটি অনেকদিন পর্যন্ত সভ্যতার আধুনিকতা থেকে দূরে ছিল।বৈদ্যুতিক সংযোগ অনেক পরে এসেছে এখানে ।গ্রামের লোকজনের মুখে শোনা দশ বছর আগেও সবাই কেরোসিন তেলের কুপি জ্বালিয়ে রাতে ঘর আলোকিত করত।সেচের মেশিন গুলোও চলত এভাবে ।গ্রামটি একটি খোলামেলা গ্রাম ।গ্রামের উত্তর ও দক্ষিণ উভয় পাশেই বিল।শীতের সময় বিলের পানি শুকিয়ে যায় । দল বেঁধে লোকজন মাছ ধরতে যায় ।বর্ষায় গ্রামের মাঠে থইথই করে পানি।বর্ষায় যখন গ্রামের মাঠ পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়,গ্রামের বিস্তৃত মাঠ থেকে জলরাশির উপর দিয়ে শীতল হাওয়া বয়ে চলে, যা গ্রামের মানুষকে গরমের দাবদাহ থেকে মুক্তি দিতে যথেষ্ট।এসময়ে গ্রামের বিলগুলোতে অনেক মাছ ধরা পড়ে ।জেলেদের তখন ব্যস্ততার শেষ নেই ।রাত জেগে বিভিন্ন রকম জাল দিয়ে মাছ ধরে তারা।সকাল হলেই মাছ বিক্রির জন্য পাশর্বর্তী হাট বাজারে ছুটে চলে তারা।রাস্তার পাশে বসেও মাছ বিক্রি করতে দেখা যায় অনেককে।এবার আসি গ্রামের আকৃতির বর্ণনায়।গ্রামটি হচ্ছে লম্বাকৃতির।রাস্তার দুপাশ দিয়ে সাপের মতো একেবেকে বয়ে চলেছে, দুই তিন গ্রাম পর্যন্ত সরু হয়ে বৃস্তিত হয়েছে ।গ্রামের প্রকৃতির বর্ণনা দিতে গেলে যে বিষয় না বললেই নয় তা হল, গ্রামের রাস্তার দুপাশে সারি সারি ইউক্যালিপ্টাস গাছ ।যেখানে ক্লান্ত পথিকেরা বিশ্রাম নিতে পারে ক্লান্তি দূর করার জন্য ।গ্রামের একটি বড় পুকুর ও মসজিদের পুকুর আছে, যা নিয়ে লোকমুখে নানা লোককথা শোনা যায় ।বড় পুকুরটি গ্রামের মধ্যভাগে অবস্থিত।লোকেরা বলে পুকুরটিতে লোকে আগে স্বর্ণের নৌকা দেখতে পেত।জ্যুতিময় কোন এক মানব অবয়ব গরিব মানুষকে সাহায্য করত।কিন্তু সাহায্যের কথা কাউকে বলা নিষেধ ছিল।কোন একলোক অন্য লোকের কাছে বলার পর আর কোনদিন এগুলো কেউ দেখেনি।এবার আসি গ্রামের মসজিদের পুকুরের কথায় । জনশ্রুতি আছে এলাকায় বড় কোন অনুষ্ঠান হলে যত থালা বাসন লাগত তা পুকুর থেকে জ্বীনেরা দিয়ে যেত।এরকমটি চলে এসেছিল বছরের পর বছর ।তারপর যা হবার তাই হল।কোন এক লোক লুকিয়ে রাখল জ্বীনদের থালা। এরপর থেকে আর কেউ থালাবাসন পায়নি মসজিদের পুকুর থেকে ।সবই লোকের মুখে শোনা কথা। কেউ বিশ্বাস করে আবার কেউ করেওনা।এখন নিয়ে আসি বর্তমানে ।গ্রামের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে ।রাস্তাঘাট হয়েছে, স্কুল মাদ্রাসা হয়েছে ।এগিয়ে চলছে সমৃদ্ধির পথে।গ্রামের সমৃদ্ধি সাফল্যের কথা সবাই শোনতে চায়।
0 Comments