গ্রাম বাংলার লোককথা পঞ্চম পর্ব

গ্রাম বাংলার গল্প

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদী, বর্ষার জলে টইটম্বুর হয়ে, দুকোল উপচে উঠে আসে বসতবাড়ির কাছে, এমন একটা গ্রামের গল্প আজ লিখতে যাচ্ছি।

একটি বাজার কে কেন্দ্র করে চারটি রাস্তা একত্রে মিলিত হয়ে চৌরাস্তা তৈরি হয়েছে । এই চৌরাস্তার চার রাস্তার পাশ গিরে গ্রামটি বৃস্তিত । ফসল লাগানোর সময় সবুজ, আর ফসল ঘরে তোলার সময় সোনালী আভা যেন উপচে পড়ে। চৌরাস্তায় গড়ে উঠা বাজার গ্রামটির পুরনো ঐতিহ্য । বাজারে সবরকম প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দোকান থাকার কারনে আশেপাশের যে সব গ্রামে বাজার নেই তারাও ছুটে আসে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়করার জন্য । সারাদিনের কাজ শেষে বাজারে চায়ের দোকানে আড্ডাও বেশ জমিয়ে দেয় গ্রামের মানুষ । তাদের আড্ডায় আসলে এলাকার সব খবর পাওয়া যায়।

গ্রামে উচ্চ মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকায় কমবেশি সকলেই তাদের ছেলেমেয়েদের অন্ততঃ মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত পড়াতে পারে। গ্রামে আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে । আসলে বিদ্যুৎ আসার পরই গ্রামের চেহারা ঘুরে যায় । গ্রামের প্রায় সম্পূর্ণ অংশে মুসলমানদের বাস হলেও দক্ষিণ অংশে আছে হিন্দু পাড়া। সেখানে কামার - কুমার হিন্দুরা পূর্ব- পুরুষ থেকে বসবাস করে আসছে। যদিও আশে পাশে মুসলমানদের বেশ কয়েকটি বাড়ি আছে । হিন্দু মুসলমান মিলে মিশেই বাস করে এখানটায়। তেমন কোন ঝগড়া- বিবাদ তাদের মধ্যে নেই বললেই চলে।

গ্রামের দক্ষিণাংশে একটি করে দাখিল ও কওমি মাদ্রাসা রয়েছে। মাদ্রাসার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে প্রতিবছর এখানে তিনদিনব্যাপী ইসলামী জলসা হয় । যা এ এলাকাতে সবচেয়ে বড় ইসলামী জলসা। শেষের দিন মাংস খিচুড়ির আয়োজন করে এলাকাবাসী, সে খিচুড়ির স্বাদের কথা এলাকার শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউই ভুলতে পারে না। গ্রাম বাংলার এমন বর্ণনা লিখতে লিখতে কখন যে ছোটবেলায় ফেলে আসা স্মৃতির সিড়ি বেয়ে মন হারিয়ে যায় শিশির ভেজা কোন গ্রামের মেঠো পথে তা টের পাওয়া মুশকিল । অনুভূতি গুলো এখনও তীব্র, শুধু সময়টা আলাদা ।

গ্রাম বাংলা
Pic:গ্রাম বাংলা

Comments

Popular posts from this blog

Protein

দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি ও নাগরিক ভাবনা