বাহারউদ্দিনের কনে দেখা

কনে বাড়িতে বাহারউদ্দিন

আপনাদের হয়তো মনে আছে এর আগেও বাহারউদ্দিনকে নিয়ে লিখেছিলাম। তার বাহারী কার্যকলাপ কারও অজানা নয়। এবার হয়েছে আর একটি মজার ঘটনা । কামাল ভাই, বাহারউদ্দিনের কলিগ, অফিসে গিয়ে বাহারউদ্দিনকে খোঁজে পাচ্ছেন না । তিনি বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত । ছোট ভাই হিসেবে বাহারউদ্দিনকে অনেক স্নেহ করেন, ভাল- মন্দ খোঁজ খবর রাখের। পরে অফিসের অন্য কলিগের কাছে জানতে পারেন বাহারউদ্দিন কনে দেখার জন্য ছুটি নিয়েছে। বাহারউদ্দিনের বয়সের কথা নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে। প্রায় আটত্রিশ হবে। বিকেলের দিকে কামাল ভাই বাহারউদ্দিনকে ফোন দিলেন খোঁজ নেওয়ার জন্য । তিনি বাহারউদ্দিনকে বললেল, কিব্যাপার বাহারউদ্দিন , কি খবর? পাত্রী পছন্দ হয়েছে? বাহারউদ্দিন যা বলল তাতে কামাল ভাই সহ আমরা সবাই হাসতে হাসতে শেষ। বাহারউদ্দিনের ঘটনাটা ছিল এরকম, আগের দিন অফিস থেকে ছুটি নিয়ে রেখেছি পাত্রী দেখতে যাব বলে। বড় বোন আর ভাগনেকে ফোন দিলাম তোমারা সকাল সকাল চলে এসো এক জায়গায় পাত্রী দেখতে যাব । আপা বড় ভাগনে মনির কে নিয়ে সকালেই চলে আসলেন। মনির বড় আপার বড় ছেলে। মাত্র বি,এস,সি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে মোটামুটি একটা জব শুরু করছে। বড় আপু এসেই আমাকে তাড়া দিলেন কিরে বাহার এখনো রেডি হোসনি, তোর আক্কেল আর কবে হবে, তাড়াতাড়ি কর, অনেক দূরের পথ যেতে হবে। আপুর ধমকে তাড়াহুড়া করে রেডি হলাম। সবাই মিলে বের হলাম। প্রথমে সি,এন, জি তারপর কিছু রাস্তা বাসে করে সকাল সাড়ে দশটায় পৌঁছলাম পাত্রীর বাড়িতে। পাত্রীর বড় ভাই এসে সবাইকে সালাম দিয়ে ভিতরে নিয়ে গেল। ঘটক সাহেব পাত্রীর বাবাকে বললেন আপনাদের মেয়ে কে নিয়ে আসেন। যথা সময়ে মেয়েকে নিয়ে আসা হল। আপু মেয়ের নাম জিজ্ঞাসা করার পর বললেন পড়াশোনা কতদূর। পাত্রী জানালো এবার এস,এস,সি পরীক্ষা দিয়েছে। এদিকে আমি দেখলাম পাত্রী বারবার আমার ভাগনে মনিরের দিকে আড়চোঁখে তাকাচ্ছে, তার চেহারায় লাজুক হাসির আভা। সবাই বিভিন্ন প্রশ্ন করা শেষ হলে আপা পাত্রীর মাকে বললেন পাত্রীকে নিয়ে যেতে। পাত্রী চলে গেলে আপা বললেন পাত্রী আমাদের পছন্দ হয়েছে, আপনাদের কি পাত্রের সম্পর্কে কিছু বলার আছে? পাত্রীর বাবা মনিরকে বললেন, আচ্ছা বাবাজি আপনি কোথায় পড়াশোনা করেছেন? মনির উওর দিল ঢাকায় একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছি। কিন্তু আমাকে এসব কেন জিজ্ঞাসা করছেন, আমি পাত্র নই , পাত্রের ভাগনে । মেয়ের বাবা, আমাকে বলল ভাই সাহেব তাহলে পাত্রকে ছাড়াই চলে এসেছেন। আমি তু মেয়ের বাবার কথা শুনে অজ্ঞান। কেউ আমাকে মাথায় পানি ঢাল। কি আর করার। আপু বলতে চাইলো পাত্র আমার ভাই, আমার ডানপাশে যে বসে আছে। আমি আপুকে না বলতে দিয়ে উঠে চলে আসলাম। আপুও আমার সাথে আসলেন। আমি বললাম, আপু তোমার ছেলেকেই বিয়ে দাও আমি আসি। আপু আমাকে ধমক দিয়ে বললেন তুই দাঁড়া, আমি বিদায় নিয়ে আসি। এরপর পাত্রীর বাবাকে কোনরকম বুঝিয়ে সুঝিয়ে আমরা চলে আসলাম। এই ছিল ঘটনা।

কামালভাই বাহারকে জিজ্ঞাসা করলেন তা বাহার আবার কবে পাত্রী দেখতে যাবে? বাহার বললো, আর জীবনে আমি পাত্রী দেখতে যাচ্ছি না। পাত্রীর বাবা মায়ের চাহিদার শেষ নাই, কম বয়সী পাত্রও লাগবে, আবার ভালো চাকরিও লাগবে। কথা গুলো অনেক খোভের সাথে বলল। কামাল ভাই তাকে শান্তনা দিলেন , মন খারাপ করোনা ভাগ্যে যা আছে তা হবেই।

Post a Comment

0 Comments