ভাগ্য বদল
একাকার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে ঘুরে কাপড় সেলাইয়ের কাজ করেন সুধীর। তাঁর সাত ছেলেমেয়ে । সংসারের খরচ জোমাতে হিমশিম খেতে হয় । চাষের কিছু জমি থাকার জন্য রক্ষা । তা না হলে দুবেলা দুমুঠু ভাত জোগাড় করাও তাঁর জন্য কঠিন হয়ে যেত । এদিকে দেখতে দেখতে ছেলেমেয়ে গুলো বড় হতে লাগল। বড়ছেলে সুবল। শ্যাম বর্ন, সাস্থ মোটামুটি ভালোই বলা চলে। সুবল যখন মেট্রিকুলেশন পাশ করল তখন তার বাবা চিন্তা করলেন তাকে কোন চাকরিতে পাঠিয়ে দিবেন। সুধীর যেহেতু নিয়মিত বিভিন্ন হাটে যান , এতে করে হাটের বেশ কিছু মহাজনের সাথে তাঁর ভালো জানাশোনা হয়ে যায় । এমন একজন মহাজন হলেন বাঁশখোলা বাজারের অমল সাহা। লোকটা খুব অমায়িক, তা না হলে সুধীরের মতো কম অবস্থা সম্পন্ন লোকের সাথে তিনি মিশতেন না। এদিকে অমল সাহার দাদা বিমল সাহা, তিনি কৃষি মন্ণালয়ের বড় কর্মকর্তা । তিনি শহরেই থাকেন তাঁর পরিবার নিয়ে । পূজা পার্বণে বাড়িতে আসেন বছরে দু একবার। তবে তিনি এলাকার লোকদের অনেক কদর করেন। তাঁর মন পড়ে থাকে এলাকায় । তিনি এলাকার লোকদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চান। উপরওয়ালা সবাই কে সুযোগ দেন। বিমল সাহাও সুযোগ পেলেন ভালো কাজ করার।মন্রনালয়ের অধীনে বেশ কিছু লোক নিয়োগের দায়িত্ব পড়ল তাঁর উপর। তিনি তার ভাই অমল সাহাকে জানিয়ে দিলেন এ বিষয়ে। এদিকে একদিন সুধীর চিন্তিত চেহারা নিয়ে অমল সাহার দোকানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় অমল সাহা তাঁকে ডাঁকলেন, ওহে ভাই সুধীর, তাড়া কিসের, বস একটু গল্প করি। সুধীর বললেন অমলদা বেশ ঝামেলায় আছি। আমার আয় দিয়ে সংসার চালানো দিনকে দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে । তাই ভাবছি বড় ছেলেটাকে কোন কাজে পাঠাবো, কিন্তু বললেই তো আর ভালো কাজ পাওয়া যায় না, তাই চিন্তায় আছি । অমল সাহা বললেন, তা তোমার ছেলের পড়াশোনার কতদূর । সুধীর উওর দিলেন, এবছর মেট্রিক পাশ করেছে । চিন্তা করোনা ভাই, দাদা কাল ফোন করেছিলেন, তাঁর অফিসে ভালো বেতনে কিছু ছেলে নিবে। তুমি চাইলে কথা বলে দেখতে পারি। সুধীর বললেন, দাদা তাহলে তো ভালো হয় । তাহলে আজ আসি।, তুমি খোঁজখবর নিও। দিন পনেরো পরের কথা । অমল সাহা , সুধীরকে খবর পাঠালো যে তোমার ছেলেকে কাগজ পত্র নিয়ে দাদার অফিসে দেখা করতে বল। চাকরিটা হয়ে যাবে । এর কয়েকদিন পর সুবল কাগজপত্র নিয়ে বিমল সাহার অফিসে দেখা করতে গেল। বিমল সাহা সুবলকে কুশলাদি জিজ্ঞাসা করে কাগজপত্র দিতে বললেন । কাগজপত্র পরীক্ষা করে তিনি বললেন সবকিছু ঠিক আছে । তুমি যাতে আগামী মাস থেকে কাজে যোগদান করতে পার সেই ব্যবস্থাই করছি। চলবে
ভাগ্য বদল শেষ পর্ব
0 Comments