কষ্টের বাস্তবতা

বাস্তবধর্মী গল্প:

আজ আপনাদের শোনাব গ্রামের সহজ সরল মেয়ের বাস্তব কাহিনী । পাবনা জেলার দূরবর্তী প্রত্যন্ত গ্রামের গল্প ।আষাঢ় মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিন।এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিল একটা শ্যামলা রঙের মেয়ে ।পাঁচ ভাইবোনের সবার ছোট।আদরের কোন কমতি ছিলনা।মেয়েটির নাম ঝর্ণা ।বাবা আর ভাইয়েরা মিলে যা রোজগার করত তাতে সংসার ভালই চলত।আস্তে আস্তে মেয়েটি বড় হতে লাগল। গ্রামের স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করে মাধ্যমিকে ভর্তি হয়।গ্রামের হাইস্কুলে ।মাধ্যমিক পাশও করল।ভালই চলছিল দিনগুলো ।এদিকে মাধ্যমিকে পাশ করার পর কলেজে ভর্তি হয়। মেয়ে বড় হচ্ছে, বাবা মায়ের চিন্তার শেষ নেই ।ভালো পাত্র দেখে বিয়ে দিতে হবে ।এমনিতেই শ্যামলা মেয়ে ।পাত্রপক্ষ সাধারণত ফর্সা মেয়েদেরই বেশি পছন্দ করে।উপরওয়ালা সবার জন্য জোড়া লিখে রেখেছেন ।এনিয়মে ঝর্ণারও বিয়ে হয়ে গেল। ঝর্ণার স্বামীর পরিবার মোটামুটি স্বচ্ছল ছিল।বিয়ের প্রথম আট নয় মাস সুখে শান্তিতেই কাটছিল।এর মধ্যে ঝর্ণার গর্ভে এল সন্তান ।যথাসময়ে একটি মেয়ে বাচ্চার জন্ম দিল ঝর্ণা ।মেয়ে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর থেকেই ঝর্ণার জীবনের দূর্যোগ শুরু।স্বামী ধিরে ধিরে অবহেলা করতে থাকে ।ভালমতো কথা বলেনা।কথা বলতে গেলে মেজাজ দেখায়।দুর্বিষহ এক অবস্থা ।একদিকে ছোট বাচ্চার লালন পালন আর অন্যদিকে স্বামীর বাজে ব্যবহার বিষন খারাপ অবস্থা ।কে জানত ঝর্ণার কপালে আরও কষ্ট লেখা আছে ।মেয়ের বয়স যখন চার বছর তার স্বামী হঠাৎ করে কোথাকার কোন মহিলাকে বিয়ে করে নিয়ে আসে।কি করবে ঝর্ণা, একদিকে মধ্যবিত্ত বাবা মা। বাবা মায়ের কাছে ফিরে আসবে সে অবস্থাও নেই ।সতিনের সাথেই ঘর করতে লাগল। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলনা।ঝর্ণা পারলনা তার পরিবার টিকিয়ে রাখতে ।অত্যাচারের মাত্রা এত বেড়ে গেল যে বাধ্য হয়ে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসল।শুরু হল জীবন সংগ্রাম ।নিজে ইনকাম করে নিজে চলা।গ্রামের বাচ্চাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়াতে শুরু করল ঝর্ণা ।যা টাকা পায় মা মেয়ে মিলে কোনমতে চলে।এভাবে চলতে থাকে ঝর্ণার জীবন ।দিন যায়, দিন আসে।অজানাই থেকে যায় মানুষের জীবনের নানা সুখ দুঃখের গল্প ।গল্পগুলো কখনো হাসি কান্নার আবার কখনো সুধুই কষ্টের ।

Post a Comment

1 Comments