রতনের বোনের বাড়ি যাত্রা দ্বিতীয় পর্ব

যাত্রা পথে রতন

চলতে চলতে এক সময় তার মাঝে কাল্তি চলে আসে। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য সে জঙ্গলের এক জায়গায় থামল। চারদিকে গাছপালা দিয়ে ঘেরা একটা জায়গা । সর্বত্র অপরিচিত বড় বড় গাছ গাছালি।গাছে গাছে অদ্ভুত ধরনের অপরিচিত পাখি। পাখির মাথাগুলো ছোট তবে দেখতে অনেকটা গরুর মাথার মতো দেখতে। পাখি গুলো এমন অদ্ভুত একধরনের শব্দ করছে যেন তারা নিজেদের মধ্যে কোন অপরিচিত ভাষায় কথা বলছে।

দূর থেকে হাতির ডাক শোনা যাচ্ছে । মনে হচ্ছে আসেপাশে কোথাও হাতির পাল চড়ে বেড়াচ্ছে মনের আনন্দে। এরকম মনোরম পরিবেশ দেখে রতনের কান্তি এমনিতেই অনেকটা কেটে গেল । কিন্তু একটু পর সে ক্ষুধা অনুভব করল। কিছু ভেবে পাচ্ছিল না কি খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করবে, যদিও চারপাশের গাছগুলোতে নানা রঙের আকর্ষণীয় ফল দেখতে পাচ্ছিল। কিন্তু তার সন্দেহ হচ্ছিল ফলগুলো যদি বিষাক্ত হয় তবে খেলে নিশ্চিত মৃত্যু ।তাই সে ভাবছিল কি করা যায় । সে হাটতে হাটতে আরও গভীর জঙ্গলের দিকে ডুকে গেল।কিছুদূর যাওয়ার পর দেখতে পেল একদল বূড়ো হনুমান ।সে লক্ষ্য করল তাদের হাতে গোলাপী রঙের কোন একটি ফল। ফলগুলোর খোসা ছাড়িয়ে হনুমানগুলো তৃপ্তি সহকারে খাচ্ছিল। রতন বুঝতে পারল এগুলো কোন বিষাক্ত ফল না। বিষাক্ত ফল হলে হনুমানগুলো কখনো খেতনা।

তারপর সে ওরকম ফলের সন্ধানে বেরিয়ে পরল। প্রায় আধামাইল হাটার পর সে লালরঙের গাছ দেখতে পেল যে গাছের ফলগুলো হচ্ছে ঐ হনুমানগুলোর খাওয়া ফলের মতো ।কিন্তু সমস্যা হলো গাছগুলো অনেক লম্বা । সে ভাবতে লাগল লাঠির মতো কিছু জোগাড় করে একত্রে বেঁধে লম্বা লাঠি তৈরি করে পরে সে ফলগুলো সংগ্রহ করবে। সে তৎক্ষনাৎ বাঁশের মতো লম্বা জাতীয় ছোট গাছ খোঁজতে লাগল । খোঁজতে খোঁজতে পেয়েও গেল এরকমের গাছ। অনেক কষ্টে সেখান থেকে গাছ গুলো ভেঙে একত্র করল। এরপর জংলি লতা দিয়ে শক্ত করে বেঁধে নিয়ে লম্বা লাঠি তৈরি করল।লাঠি দিয়ে সে সহজেই ফলগুলো পাড়তে পারল। এতে করে তার খাবারের সমস্যা আর রইলনা।

এখন তাকে পানির সন্ধান করতে হবে।করতে হবে নদীর সন্ধান ।যে নদীর তটরেখা ধরে উল্টোদিকে এগিয়ে গিয়ে মানব বসতি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে । সে যেদিক থেকে হাতীর ডাক ডাক শুনেছিল সেদিকে এগিয়ে গেল। কিছু পথ যাওয়ার পর দেখল একদল হাতি মনের সুখে পাহাড়ি লতাপাতা খাচ্ছে। তখন সে সিদ্ধান্ত নিল হাতী যেহেতু আছে, আসে পাশে কোথায় অবশ্যই পানির উৎস আছে। সে ওখানেই অবস্থান করতে লাগল। উদ্দেশ্য হাতীদের অনুসরন করে জলের কাছে পৌছে যাওয়া ।

রতনের বোনের বাড়ি যাত্রা তৃতীয় পর্ব

Comments

Popular posts from this blog

Protein

দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি ও নাগরিক ভাবনা

গ্রাম বাংলার লোককথা পঞ্চম পর্ব